
ভারতের উত্তর প্রদেশে বেওয়ারিশ কুকুরের ক্রমবর্ধমান আক্রমণ ঠেকাতে রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো কুকুর যদি বিনা উসকানিতে কাউকে কামড়ায় তবে প্রথমবার ১০ দিনের জন্য পশুকেন্দ্রে বন্দি রাখা হবে। তবে একই কুকুর দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে সারাজীবনের জন্য বন্দিদশায় থাকতে হবে, যা কার্যত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সমতুল্য। বুধবার উত্তর প্রদেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা প্রকাশ হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রাণী অধিকার কর্মীরা বলছেন, এটি অমানবিক এবং অপ্রয়োগযোগ্য এক আইন।
ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. বিজয় অমৃতরাজ জানান, প্রথমবার বন্দি করার পর কুকুরদের মাইক্রোচিপ বসানো হবে, যাতে ভবিষ্যতে তারা পুনরায় আক্রমণ করলে সহজেই শনাক্ত করা যায়। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি কুকুরটিকে পোষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন এবং হলফনামা দিয়ে অঙ্গীকার করেন যে কুকুরটিকে আর কখনও রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হবে না, তাহলে সেই প্রাণী মুক্তি পেতে পারে। এই নির্দেশনার পর কুকুরপ্রেমী সংগঠনগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছে, বেওয়ারিশ কুকুর সমস্যার সমাধান বন্দিদশায় নয়, বরং টিকাদান, নির্বীজন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই সম্ভব।
এর আগে দিল্লিতে বেওয়ারিশ কুকুর সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, কিন্তু জনরোষের মুখে তা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ভারতে সবচেয়ে বেশি বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে উত্তর প্রদেশেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন নির্দেশনার ফলে রাজ্যে প্রাণী সুরক্ষা আইন ও মানবাধিকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হবে। একই সঙ্গে, সমস্যার মূল সমাধান থেকে দৃষ্টি ঘুরে গিয়ে কুকুরদের প্রতি অমানবিক আচরণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে।