
সিঙ্গাপুর, ৩১ মে ২০২৫ — পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভারতের কয়েকটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন, এই সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কার পর্যায়ে পৌঁছেনি।
শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শ্যাংগ্রি-লা ডায়ালগ সম্মেলনে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) জেনারেল অনিল চৌহান এই তথ্য জানান।
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে—এই দাবিকে “একেবারেই ভুল” বলে উড়িয়ে দেন জেনারেল চৌহান। তবে ভারত কতটি বিমান হারিয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ না করে তিনি বলেন, “সংখ্যা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কীভাবে সেগুলো হারানো হয়েছে এবং কী ভুল হয়েছে—সেই বিশ্লেষণ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের কৌশলগত দুর্বলতা শনাক্ত করেছি, এবং মাত্র দুই দিনের মধ্যেই সব যুদ্ধবিমান আবার আকাশে উড়িয়েছি। আমরা দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে হামলা পরিচালনা করেছি।”
গত ৭ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দফা বিমান হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দাবি করেছিলেন যে ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এই দাবির নিরপেক্ষ কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এতদিন ভারত সরকার এই বিষয়ে নীরব থাকলেও, জেনারেল চৌহানের এই মন্তব্য ভারতীয় পক্ষ থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তিনি আরও আশ্বস্ত করে বলেন, “এই সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে গড়ায়নি। উভয় পক্ষই সংঘাতকে সীমাবদ্ধ রেখেছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই স্বীকারোক্তি সামরিক কৌশলগত মূল্যায়নের অংশ এবং ভবিষ্যতের প্রস্তুতির ইঙ্গিত বহন করে। ভারতীয় সামরিক বাহিনী এখন ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও মিসাইল প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।