
সিউল, ৪ জুন ২০২৫ — দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের অভিশংসনের পর অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন দেশটির উদারপন্থি নেতা লি জায়ে মিয়ং। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘোষিত ফলাফলে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী লি জায়ে মিয়ং পেয়েছেন মোট ভোটের ৪৯.৪২ শতাংশ। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির কিম মুন-সু পেয়েছেন ৪১.১৫ শতাংশ ভোট।
লি জায়ে মিয়ংয়ের এই জয়কে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখযোগ্য যে, মাত্র তিন বছর আগেই তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
নির্বাচনের পরপরই লি এক বিবৃতিতে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, “এই জয় কোনো দলের নয়, এটি জনগণের বিজয়। এখন সময় এসেছে মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে একসাথে কাজ করার।”
আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন প্রেসিডেন্ট
নতুন প্রেসিডেন্টের সামনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় ফিরলে, দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন করে পর্যালোচনার প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, অতীতে লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক জোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনী প্রচারে তিনি কিছুটা নমনীয় অবস্থান নেন, বিশেষ করে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রম এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ কোরিয়ায় সেনা মোতায়েন নিয়ে উদ্ভূত গুঞ্জন নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য তাৎক্ষণিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
গণতন্ত্রের বিজয়
লি জায়ে মিয়ংয়ের এই বিজয় দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের বার্তা বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। অভিশংসনের মতো বড় রাজনৈতিক ঘটনার পর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া আবারও তাদের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে।