
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরন এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশে অবাধ সুযোগ নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন। শনিবার প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের একটি স্থায়ী ও টেকসই সমাধানের পক্ষে মত দেন। তারা বলেন, সহিংসতা বন্ধ না হলে হাজার হাজার নিরীহ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষের জীবনহানি অব্যাহত থাকবে। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের অবরোধে গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ সীমিত হয়ে পড়েছে—যার ফলে সেখানে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ এবং চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘ইসরায়েলকে অবশ্যই সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’’ একইসঙ্গে তিনি ও আনোয়ার ইব্রাহিম ফিলিস্তিনের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দেন, যা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার পশ্চিমা বিশ্বের ‘দ্বিমুখী নীতি’র সমালোচনা করে বলেন, “ইরানকে না বলা হলেও, ইসরায়েলকে হ্যাঁ বললে নৈতিক দ্বিচারিতা স্পষ্ট হয়।” পাশাপাশি তিনি ইরানকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানান।
মালয়েশিয়া বরাবরই ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক অধিকারকে সমর্থন করে আসছে এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরোধিতা করছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ৯০% জনগণ বাস্তুচ্যুত এবং অর্ধেকের বেশি অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক আদালতের গণহত্যা প্রতিরোধ নির্দেশের পরও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। ম্যাকরন ও আনোয়ারের এই যৌথ আহ্বান আন্তর্জাতিক মহলের ওপর চাপ তৈরি করেছে যাতে যুদ্ধরত পক্ষগুলো শর্তহীন যুদ্ধবিরতি মেনে নেয় এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা যায়।
সূত্র: আল জাজিরা