ইউরোপিয়ান হাসপাতালের নিচে হা’মাস নেতার মর’দেহের সন্ধান, ভিডিও প্রকাশ ইসরা’য়েলের

গাজা, ৯ জুন ২০২৫ — ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার খান ইউনিসে ইউরোপিয়ান হাসপাতালের নিচে একটি সুড়ঙ্গে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারের মরদেহ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে। রোববার (৮ জুন) স্থানীয় সময় এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, ডিএনএ পরীক্ষা করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেনি।

আইডিএফ জানায়, সিনওয়ারের মরদেহের পাশেই হামাসের রাফাহ ব্রিগেডের কমান্ডার মোহাম্মদ সাবানেহরের মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ব্যক্তিগত সামগ্রী ও গোয়েন্দা সরঞ্জাম।

প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ইউরোপিয়ান হাসপাতালের সামনে খননকৃত সরু সুড়ঙ্গের প্রবেশপথ এবং তার গভীরে বেশ কয়েকটি কক্ষ। এক কক্ষে দেখা যায় পোশাকের স্তূপ, কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার ও দেওয়ালে হেলান দেওয়া একটি রাইফেল। ভিডিওতে একটি মৃতদেহকে দড়ি দিয়ে টেনে বের করতে দেখা যায়, যার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

আইডিএফ দাবি করে, গত ১৩ মে গাজার একটি বিমান হামলায় মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হন। হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, ঐ হামলায় মোট ২৮ জন নিহত হয়।

আইডিএফ-এর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডিফ্রিন বলেন, “এই সুড়ঙ্গ প্রমাণ করে যে হামাস হাসপাতাল ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।” তিনি আরও বলেন, “এটি হামাসের চিরাচরিত কৌশল, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।”

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, হামাস হাসপাতাল, স্কুল ও অন্যান্য বেসামরিক স্থাপনায় অস্ত্র মজুদ এবং কমান্ড সেন্টার পরিচালনা করে। তবে হামাস ও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

প্রসঙ্গত, গাজায় চলমান ইসরায়েলি অবরোধ ও হামলার ফলে সেখানকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। গত এপ্রিলের আল-আহলি হাসপাতাল হামলার পর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী হাসপাতাল, চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষার যে ব্যবস্থাগুলো থাকা উচিত, তা গাজায় কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।”

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীরতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *