
আহমেদাবাদ, ১২ জুন:
ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর মধ্যে ২৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছেন কেবল একজন— ৪০ বছর বয়সী বিশ্বাস কুমার রমেশ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১ আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিট পরই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিধ্বস্ত হয় এবং মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। এতে ২৩০ জন যাত্রী, দুইজন পাইলট এবং ১০ জন কেবিন ক্রু সদস্যের সবাই নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল।
বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তি
গুজরাটের আসারওয়া সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাস কুমার। তিনি বুক, চোখ এবং পায়ে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সাধারণ ওয়ার্ডের একটি বিছানায় শুয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “বিমান উড্ডয়নের ৩০ সেকেন্ড পরই বিকট এক শব্দ শুনতে পাই। তারপরই সবকিছু কেঁপে ওঠে, আর পরক্ষণেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। এত দ্রুত সবকিছু ঘটে যে, কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।”
পরিস্থিতি ও ত্রাণ তৎপরতা
বিধ্বস্তের পরপরই আহমেদাবাদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও জরুরি সেবাসংস্থাগুলোতে ব্যস্ততা শুরু হয়। আত্মীয়স্বজনেরা ছুটে যান নিহতদের খোঁজে। সিভিল হাসপাতালে কান্না, আতঙ্ক আর হতাশার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানটিতে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে।
সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এবং নিউজ-১৮ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার জন্য ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার ও বিশ্লেষণের কাজ শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।