
ঢাকা, ২৪ মে ২০২৫ — বহুল প্রতীক্ষিত নতুন ডিজাইনের ব্যাংক নোট আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম ধাপে ছাড় করা হবে এক হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ নতুন নোট। যাত্রা শুরু হবে ২০ ও ৫০ টাকার নোট দিয়ে, পর্যায়ক্রমে বাজারে আসবে সব ধরনের নোট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন নোটগুলোতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য এবং ডিজাইনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ‘জুলাই আন্দোলনের’ চিত্রাবলিকে।
নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, “এ মাসের মধ্যেই দু-তিনটি নোট বাজারে আসবে। সব নোট একসঙ্গে ছাপানো সম্ভব নয় বলে ধাপে ধাপে ছাড়া হবে। ইতোমধ্যে প্রিন্টের কাজ চলছে।”
শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতির মধ্যেই ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তা স্থগিত করে। একইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় পূর্বে ছাপানো নোটের বিনিময় প্রক্রিয়া। ফলে বাজারে খুচরা টাকার সংকট দেখা দেয় এবং প্রচলিত ছেঁড়া-ফাটা নোটের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আশ্বাস দিয়েছে, এই দুর্ভোগ খুব শিগগিরই শেষ হতে চলেছে। প্রথম দফায় ২০ ও ৫০ টাকার নোটের পর এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আসবে এক হাজার টাকার নোটও।
বর্তমানে বাজারে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৯ ধরনের নোট প্রচলিত রয়েছে। সরকার এই ৯ ধরনের সব নোট নতুন ডিজাইনসহ পুনর্মুদ্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বড় ধরনের ডিজাইন পরিবর্তনের কারণে সময় কিছুটা বেশি লাগছে, তবে প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।
নতুন নোটগুলোতে স্থান পাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন—আহসান মঞ্জিল, ষাট গম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং হরিণ। কিছু নোটে ‘জুলাই আন্দোলন’-এর গ্রাফিতিও প্রতিফলিত হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন নোট আসার পর ধাপে ধাপে পুরনো নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের লেনদেনে যাতে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে, সে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।